কলা খাওয়ার উপকারিতা, অপকারিতা ও নিয়ম

কলা খাওয়ার উপকারিতা, অপকারিতা ও নিয়ম

 

কলা খুবই সহজলভ্য একটি ফল। কলা খুব সহজলভ্য  ও সস্তা হওয়ায়  অনেকেই পছন্দ করে না। তবে আপনার পছন্দ বা অপছন্দ যাই হোক না কেন  প্রতিদিন একটি কলা আপনার স্বাস্থ্যের জন্যে খুবই উপকারী।কলা অনেক গুরুত্বপূর্ণ পুষ্টির উৎস এবং সুস্বাদু একটি ফল। নানান রকমের ভিটামিন ও মিনারেলস এর সমন্বয়ে তৈরি কলা মানবদেহের জন্যে খুবই উপকারী একটি ফল। এর পুষ্টি গুনের পাশাপাশি ঔষধি গুনও রয়েছে যা মানুষের শরীরকে বিভিন্ন রোগমুক্ত ও প্রতিরোধে সাহায্য করে। 

 

কলার উপকারিতা

কলা শুধু এক সময় দক্ষিন এশিয়ায় পাওয়া যেত। যেকোনো পরিবেশে এর বেড়ে উঠার ক্ষমতা ও উচ্চ পুষ্টি মানের জন্যে এটি এখন সারা বিশ্বেই খুবই সহজে পাওয়া যায়। বাংলাদেশের প্রায় সর্বত্র ও সকল মৌসুমেই কলা উৎপাদিত হয়। কলা মানুষের হজমের সমস্যা দূর করে, ওজন কমানো ও হার্ট ভালো রাখতে সাহায্য করে। তাহলে জেনে নেয়া যাক, কলা খাওয়ার উপকারিতা।

 

পুষ্টিগুণে ভরপুর

কলাতে যথেষ্ট পরিমাণে ফাইবার এবং বেশ কিছু অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট থাকে। একটি মাঝারি আকারের কলার (১২৬গ্রাম) পুষ্টি উপাদান বিশ্লেষন করলে দেখা যায়-

  • ক্যালোরি: ১১২
  • চর্বি: 0 গ্রাম
  • প্রোটিন: ১ গ্রাম
  • কার্বোহাইড্রেট: ২৯ গ্রাম
  • ফাইবার: ৩ গ্রাম
  • ভিটামিন সি: দৈনিক চাহিদার ১২ % (DV)
  • রিবোফ্লাভিন: ডিভির ৭%
  • ফোলেট: ডিভির ৬%
  • নিয়াসিন: ডিভির ৫%
  • তামা: DV এর ১১%
  • পটাসিয়াম: ডিভির ১০%
  • ম্যাগনেসিয়াম: ডিভির ৮%

 

DV বলতে দৈনিক চাহিদা। একটি কলা প্রায় ১১২ ক্যালোরি সরবরাহ করে এবং এতে প্রায় একচেটিয়াভাবে জল এবং শর্করা থাকে। এতে কোন চর্বি নেই। সামান্য পরিমানে প্রোটিন থাকে।

সবুজ কাঁচা কলার কার্বোহাইড্রেটগুলো বেশিরভাগই স্টার্চ  যেটি ফাইবার সমৃদ্ধ। দেহে এটি দীর্ঘ সময় থাকে। কলা পাকতে শুরু করলে ফাইবার কমে আসে ফলে এটি মিষ্টি হয়ে যায়।

 

ব্লাড সুগারের উন্নতি ঘটায়

কলা দ্রবণীয় ফাইবার সমৃদ্ধ। এসব ফাইবার রক্তে শর্করার মাত্রা বাড়ায় না। অনেক ডায়বেটিসের রুগী কলায় অতিরিক্ত শর্করা আছে ভেবে কলা খায় না, এ ধারনা ঠিক নয় কারন কলার শর্করা ব্লাড সুগার লেভেল বাড়ায় না বরং নিয়ন্ত্রন করে। কলার ফাইবার পেটে অনেক সময় অবস্থান করে ও ক্ষুধা কমায় যা ডায়বেটিসে আক্রান্তদের জন্যে উপকারী । এর মানে হলো যে, কলায় উচ্চতর কার্বোহাইড্রেট সামগ্রী থাকা সত্ত্বেও, কলা কারও রক্তে শর্করার মাত্রায় বড় ধরনের বৃদ্ধি ঘটাবে না। তবে ডায়াবেটিসে আক্রান্ত ব্যক্তিরা কলা উপভোগ করতে পারলেও, এক বসায় একটি কলার বেশি খাওয়া উচিৎ নয়।

 

হার্ট ভালো রাখে

পটাসিয়াম একটি খনিজ যা হার্টের স্বাস্থ্যের জন্য অত্যাবশ্যক, বিশেষ করে রক্তচাপ নিয়ন্ত্রনে। হার্টের জন্যে পটাশিয়াম খুবই গুরুত্বপূর্ণ হওয়া সত্ত্বেও খুব কম লোকই তাদের খাবারে পর্যাপ্ত পটাসিয়াম পায়। আর কলা হল পটাশিয়ামের একটি বড় উৎস, একটি মাঝারি আকারের কলা দৈনিক পটাশিয়ামের চাহিদার ১০% পূরন করে। একটি পটাসিয়াম সমৃদ্ধ খাদ্য আপনার রক্তচাপ কমাতে সাহায্য করতে পারে। গবেষনায় দেখা যায় যারা প্রচুর পরিমাণে পটাসিয়াম খায় তাদের হৃদরোগের ঝুঁকি ২৭% পর্যন্ত কম থাকে। এছাড়াও কলায় ম্যাগনেশিয়ামের মত আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ খনিজ থাকে, একটি কলা থেকেই দৈনিক চাহিদার ৮ভাগ ম্যাগনেশিয়াম পাওয়া যায়। 

ম্যাগনেসিয়ামের ঘাটতি হৃদরোগের ঝুঁকি, উচ্চ রক্তচাপ এবং রক্তে চর্বির পরিমান বাড়ায়। 

 

প্রচুর অ্যান্টিঅক্সিডেন্টসমৃদ্ধ

ফল এবং সবজি খাদ্যতালিকাগত অ্যান্টিঅক্সিডেন্টের চমৎকার উৎস, এবং কলাও এর ব্যতিক্রম নয়। এগুলোতে ফ্ল্যাভোনয়েড এবং অ্যামাইনস সহ বিভিন্ন ধরণের শক্তিশালী অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট রয়েছে। এই অ্যান্টিঅক্সিডেন্টগুলোর কাজ হলো শরীরকে রোগ ব্যাধির হাত থেকে রক্ষা করা। ফ্রী রেডিক্যাল দ্বারা সৃষ্ট আপনার কোষের অক্সিডেটিভ ক্ষতি প্রতিরোধ করতে সাহায্য করে। অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট ছাড়া, ফ্রি র‌্যাডিকেলগুলো শরীরে কার্যকর হয় এবং  সময়ের সাথে সাথে বড় ধরনের ক্ষতি করে এমনকি ক্যান্সার পর্যন্ত সৃষ্টি করতে পারে। এসব রোগের ভয়াবহতা না দেখলে মানুষ বুঝবেই না যে এই এন্টি অক্সিডেন্ট কতটা গুরুত্বপূর্ণ। কলায় প্রচুর পরিমানে এন্টি অক্সিডেন্ট থাকে। যা দেহকে মারাত্মক সব রোগ থেকে অজান্তেই রক্ষা করে। 

 

ইনসুলিনের কার্যকারিতা বাড়ায়

টাইপ 2 ডায়াবেটিস সহ বিভিন্ন দীর্ঘস্থায়ী রোগের জন্য ইনসুলিন রেজিস্ট্যান্স হয়ে পড়ে। বেশ কয়েকটি গবেষণায় দেখা গেছে যে নিয়মিত রেজিস্টান্ট স্টার্চ খেলে ইন্সুলিনের সংবেদনশীলতা বৃদ্ধি পায়। উদাহরণস্বরূপ, কাঁচা কলা প্রচুর রেজিস্ট্যান্ট স্টার্চ রয়েছে। এটি আপনার শরীরকে এই রক্ত-শর্করা-নিয়ন্ত্রক হরমোনের প্রতি আরও প্রতিক্রিয়াশীল করে তুলতে পারে ।

 

কিডনি ভালো রাখতে

কলা মানুষের কিডনি বা বৃক্ক ভালো রাখতে সাহায্য করে। দীর্ঘস্থায়ী কিডনি রোগে আক্রান্ত (প্রাথমিক পর্যায়ের) ৫০০০ জনেরও বেশি লোকের উপর হওয়া  একটি সমীক্ষায় দেখা যায়, পটাশিয়াম কিডনি রোগকে বাড়তে বাধা দেয় এবং এটি অনেক ধীর হয়ে যায়। পটাসিয়াম সুস্থ কিডনি ফাংশন এবং রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণের জন্য অত্যাবশ্যক। পটাসিয়ামের উৎস হিসেবে, আপনার কিডনি সুস্থ রাখার ক্ষেত্রে কলা বিশেষ উপকার করে। অন্যদিকে, যারা কিডনি রোগে আক্রান্ত(সিরিয়াস পর্যায়ের) বা যারা ডায়ালাইসিসে আছেন তাদের পটাসিয়াম গ্রহণ সীমিত করতে হবে। আপনি এই পর্যায়ের কিডনি রুগী হলে আপনাকে অবশ্যই ডাক্তারের পরামর্শ নিয়ে পটাশিয়াম গ্রহন করতে হবে। তবে আপনি কিডনি রোগে আক্রান্ত হওয়ার আগে কলা আপনার কিডনির রোগ প্রতিরোধ করবে। তাই খাদ্য তালিকায় নিয়মিত কলা রাখা উচিৎ।

 

ক্যান্সার প্রতিরোধে

কিছু গবেষনায় দেখা যায় যে কলার পরিমিত সেবন কিডনি ক্যান্সারের বিরুদ্ধে প্রতিরক্ষামূলক হতে পারে। ইন্টারন্যাশনাল জার্নাল অফ ক্যান্সারে ২০০৫ সালে প্রকাশিত একটি সুইডিশ গবেষণায় দেখা গেছে যে মহিলারা প্রতি মাসে ৭৫টির বেশি ফল বা শাকসবজি খান তাদের কিডনি ক্যান্সারের ঝুঁকি ৪০% কমে যায় এবং কলা বিশেষভাবে কার্যকর। মহিলারা সপ্তাহে চার থেকে ছয়টি কলা খেলে তাদের কিডনি ক্যান্সার হওয়ার ঝুঁকি অর্ধেক কমে যায়। উচ্চ মাত্রার অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট ফেনোলিক যৌগগুলির কারণে কলা কিডনি ক্যান্সার প্রতিরোধে সহায়ক হতে পারে।

 

রক্তস্বল্পতা দূর করে

শরীরে রক্তস্বল্পতার কারনগুলোর একটি হতে পারে কম আয়রন গ্রহন। এর ফলে শরীরে হিমোগ্লোবিনের পরিমান কমে রক্তস্বল্পতা দেখা দেয়। আমরা দেখেছি যে কলায় প্রচুর  আয়রন থাকে যা আয়রনের চাহিদা পূরন করার পাশাপাশি রক্তস্বল্পতা বা এনিমিয়া দূর করে। আর যারা নিয়মিত কলা খায় তাদের মধ্যে এনিমিয়ার লক্ষন খুবই কম দেখা যায়।

 

ক্রিড়াবিদদের শক্তি বৃদ্ধিতে

খেলোয়াড়দের শরীরে প্রচুর শক্তির প্রয়োজন পড়ে। কারন খেলাধুলার ফলে প্রচুর ক্যালরি ক্ষয় হয়। একজন অফিস ওয়ার্কারের চেয়ে একজন এথলেটর বা খেলোয়াড়ের পুষ্টির চাহিদা বেশি হয়। শক্তি এবং ইলেক্ট্রোলাইট পূরণের জন্য  কলা স্পোর্টস ড্রিঙ্কের চেয়ে বেশি কার্যকরী হতে পারে। ২০১২ সালের একটি গবেষণায় পুরুষ ক্রীড়াবিদদের দীর্ঘ-দূরত্বের সাইক্লিং রেসে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করা হয়েছে। তারা প্রতি ১৫ মিনিটে গ্যাটোরেডের সাথে রিফুয়েলিং অ্যাথলিটদের একটি কলা এবং জল দিয়ে রিফুয়েল করার সাথে তুলনা করেছে। গবেষকরা দেখেছেন যে ক্রীড়াবিদদের কর্মক্ষমতা সময় এবং শরীরের শারীরবৃত্তীয় উভয় ক্ষেত্রেই একই ছিল। কিন্তু কলার সেরোটোনিন এবং ডোপামিন ক্রীড়াবিদদের অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট ক্ষমতা উন্নত করে এবং অক্সিডেটিভ স্ট্রেসের সাথে সাহায্য করে, সামগ্রিকভাবে কর্মক্ষমতা উন্নত করে। ক্রীড়াবিদদের খেলার মাঝে মাঝে শক্তি বৃদ্ধির জন্যে এনার্জি ড্রিংক্স খাওয়ানো হয় । তবে এসব এনার্জি ড্রিংক্স এর চেয়েও কলা থেকে বেশি শক্তি পাওয়া যায়।

 

হজম শক্তি বাড়ায় ও ওজন নিয়ন্ত্রন করে

কলায় প্রচুর পরিমাণে ফাইবার থাকে, যা আপনার হজম শক্তি ঠিক রাখতে ও দুর্বল হজম শক্তিকে শক্তিশালী করতে সাহায্য করে। একটি কলা-ই আপনার দৈনিক ফাইবারের চাহিদার প্রায় ১০% পূরন করে। ফ্লোরেসের মতে, ভিটামিন বি 6, টাইপ 2 ডায়াবেটিস থেকে রক্ষা করতে এবং ওজন কমাতে সহায়তা করতে পারে। কলা ওজন কমায় এবং তৃষ্ণা দূর করে। কলার রেজিস্ট্যান্ট স্টার্চ অন্ত্রের স্বাস্থ্যকে ভালো রাখে এবং রক্তে শর্করাকে নিয়ন্ত্রণ করতে সহায়তা করতে পারে। প্রতিরোধী স্টার্চ অন্ত্রে শর্ট-চেইন ফ্যাটি অ্যাসিডের উত্পাদন বাড়ায়, যা অন্ত্রের স্বাস্থ্যের জন্য প্রয়োজনীয়।

 

গর্ভাবস্থায় 

গর্ভবতী মহিলাদের জন্য কলা একটি দুর্দান্ত খাদ্য। এর অনেকগুলো কারণ রয়েছে। প্রথমত, কলা ফলিক অ্যাসিড সমৃদ্ধ। ফলিক অ্যাসিড গর্ভাবস্থায় শরীরের প্রয়োজনে অতিরিক্ত রক্ত ​​তৈরি করতে ব্যবহৃত হয়। এছাড়াও, কলার উচ্চ আয়রন উপাদান রয়েছে যা রক্তস্বল্পতা প্রতিরোধে সাহায্য করে,গর্ভাবস্থায় ক্রমবর্ধমান ভ্রূণ এবং মায়ের জন্য পর্যাপ্ত রক্ত ​​রাখতে হয়। গর্ভাবস্থায় কিছু কমন সমস্যা হলো বমি হওয়া কিংবা বমি বমি ভাব, কোষ্ঠ্যকাঠিন্য, কলা এ সমস্যা গুলো ভালোভাবেই প্রতিরোধ করতে পারে। গর্ভবতী মায়েদের মধ্যে যাদের উচ্চ রক্তচাপ আছে কিংবা অতিরিক্ত লবন খাওয়ার অভ্যাস আছে তাদের এই উচ্চ রক্তচাপ নিয়ন্ত্রন করতে পারে কলা। যেহেতু গর্ভাবস্থায় সব ঔষধ খাওয়া যায় না এতে গর্ভপাত হওয়ার সম্ভাবনা থাকে। তাই সমস্যা প্রাকৃতিকভাবে সমাধান করতে পারার বিকল্প নেই। 

 

ত্বক ও চুলের যত্নে

কলা শুধুমাত্র খাওয়ার জন্যই ভালো তা নয় এটি আপনার ত্বক এবং চুলের জন্যও একটি চমৎকার উপাদান। অ্যান্টিঅক্সিডেন্টে ভরপুর কলা এবং কলার খোসা ত্বকে উজ্জ্বলতা বৃদ্ধি করে ও ক্ষতিগ্রস্ত কোষ মেরামত করতে সাহায্য করে। কলার খোসা বিশেষ করে ব্রণ নিরাময়ের জন্য ভালো কাজ করে । কলায় থাকা ভিটামিন এ ত্বকের কালো দাগ দূর করে । কলার খোসা সরাসরি মুখের দাগযুক্ত জায়গায় লাগাতে পারেন। কলার সাথে অন্যান্য উপাদান যেমন দই এবং হলুদের সাথে একত্রে মিশিয়ে একটি ফেসমাস্ক তৈরি করা যেতে পারে যা ব্রণ প্রতিরোধ করতে এবং চেহারা লাবন্যময় করতে সাহায্য করে। ফেসমাস্কের জন্য ম্যাশ করা কলায় লেবুর রস এবং মধু যোগ করলে তা তৈলাক্ত ফেইস এর সমস্যা দূর করে । কলায় থাকা বি ভিটামিনগুলো আপনার ত্বককে ক্ষতিকারক ফ্রি র‌্যাডিক্যাল থেকে রক্ষা করতে সাহায্য করবে যা অকাল বার্ধক্য সৃষ্টি করতে পারে। কলার উচ্চ আর্দ্রতা উপাদান চুলের পুষ্টির জন্যেও খুব উপকারী। আপনি চাইলে  চুলের ময়শ্চারাইজিং মাস্ক তৈরি করতে পারেন ম্যাশ করা কলা বা কলার ভর্তা দিয়ে। ফোলাভাব কমাতে ও চোখের নিচের কালি দূর করতে কলার খোসার চোখের পাতায় লাগানো যেতে পারে। এছাড়াও, মশার কামড় বা ত্বকে ফুসকুড়ির মতো জ্বালা থেকে চুলকানি দূর করতে খোসা ব্যবহার করা যেতে পারে। 

 

প্রোবায়োটিক

কলা অনেকটা প্রোবায়োটিক এর মতও কাজ করে নিচের এই সমস্যাগুলো কলা সেবনে উপকার পেতে পারেন।

 

  • মূত্রনালীর সংক্রমণ (ইউটিআই)।
  • কিছু গ্যাস্ট্রোইনটেস্টাইনাল সংক্রমণ।
  • ইরিটেবল বাওয়েল সিন্ড্রোম (IBS)
  • ল্যাকটোজ অসহিষ্ণুতা হ্রাস 
  • অ্যালার্জির কিছু লক্ষণ কমানো।

 

কলা যেভাবে খাবেন

কাঁচা কলার উপকারিতা বেশি নাকি পাকা কলার উপকারিতা বেশি কিংবা কলা রাতে খাবো নাকি দিনে এ নিয়ে অনেকের প্রশ্ন। কলা আসলে কাঁচা পাকা দুইভাবেই খেতে পারেন। কলা খাওয়ার বিভিন্ন উপায় রয়েছে। তবে কাঁচা অবস্থায় কলার স্বাস্থ্য উপকারিতা অবশ্যই বেশি। পিনাট বাটার স্যান্ডউইচে কলাও যোগ করা যেতে পারে, যার মাধ্যমে শিশুদের বেশি করে ফল খেতে উৎসাহিত করা যায়। সবুজ কলা একটি চমৎকার রান্না করা যায় এমন খাবার। কাঁচা কলা রান্না করে খাওয়ার প্রচলন আমাদের দেশে অনেক পুরোনো। এটি ভাজি করেও খায় অনেকে।

 

কলার অপকারিতা 

কলার উপকারিতার তুলনায় অপকারিতা অনেক কম। তবু অল্প কথায় কলার কিছু সাইড ইফেক্ট তুলে ধরা উচিৎ।

১. আমাদের দেশে বেশির ভাগ ব্যবসায়ী কলায় কার্বাইড মেশায় কলা পাকানোর জন্যে কিংবা অনেকদিন সংরক্ষনের জন্যে যেটি কলার পুষ্টিগুন নষ্ট করার পাশাপাশি স্বাস্থ্যের ক্ষতি করতে পারে। তাই পিউর কলা খেতে পারলেই কেবল পরিপূর্ণ পুষ্টি পাবেন।

২. কলাতে রয়েছে ট্রিপটোফ্যান, অ্যামিনো অ্যাসিড যা আপনাকে ভালো ঘুমাতে সাহায্য করে। কলা মস্তিষ্কে সেরোটোনিন উৎপাদন বৃদ্ধি করে তাই কলা খাওয়ার পর আপনার ঘুম ঘুম ভাব আসতে পারে। যদিও এটি সবার ক্ষেত্রে হয় না। 

৩. অতিরিক্ত কলা খেলে মাত্রাতিরিক্ত ফাইবারের কারনে আপনার আন্ত্রিক গোলযোগ সৃষ্টি হতে পারে। এছাড়া খালি পেটে কলা খেলেও গ্যাস্ট্রিকের সমস্যা বাড়তে পারে,

৪. আপনার যদি ডায়রিয়া থাকে সেক্ষেত্রে কলা আপনার সমস্যা কমাবে কিন্তু আপনার যদি কোষ্ঠ্যকাঠিন্যের সমস্যা থেকে থাকে তবে কলা সেবন আপনার সমস্যাকে আরো বাড়িয়ে দিবে।

 

কলা নিয়ে কয়েকটি প্রশ্ন

 

খালি পেটে কলা খেলে কি হয়?

খালি পেটে কলা খেলে পেটে গ্যাস, এসিডিটি, কোষ্ঠ্যকাঠিণ্যের মতও সমস্যা হতে পারে। তাই খালি পেটে কলা না খাওয়াই ভালো।

 

 

রাতে কলা খেলে কি হয়?

রাতে কলা খাওয়ার উপকারিতা হলো এটি সারাদিনের ক্লান্তি দূর করে শরীর সতেজ রাখতে সাহায্য করে । তবে যাদের সর্দি, কাশি, শ্বাসকষ্টের মতও সমস্যা আছে তারা রাতে কলা না খাওয়াই ভালো।

 

কলা খেলে কি ওজন বাড়ে?

কলা খেলে ওজন বেড়ে যাওয়ার সম্ভাবনা একেবারে উড়িয়ে দেয়া যায় না। বেশিরভাগের মতে যদিও কলা ওজন কমায় তবু কিছু পুষ্টিবিদ ওজন বাড়ার পক্ষেও মত দিয়েছেন বিশেষ ক্ষেত্রে।

 

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Main Menu